ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০৮/০৫/২০২৩ ৮:৫৬ এএম

বাংলাদেশের কাছে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের আগে তাদের সেখানকার নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছিল জাতিসংঘ। জবাবে বাংলাদেশ বলেছে, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার দায়িত্ব বাংলাদেশের নয়। এ দায়িত্ব জাতিসংঘের পালন করা উচিত।

ঢাকার জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর প্রধান জোহানেস ভ্যান ডের ক্লাউ গত রোববার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি জোহানেস ভ্যান ডের ক্লাউ।

তবে বৈঠক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেন, ইউএনএইচসিআর প্রধানকে রোহিঙ্গাদের পাইলট প্রত্যাবাসনের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানানো হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বলেছে, বৈঠকে রোহিঙ্গাদের পাইলট প্রত্যাবাসনের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা অর্থায়নের সর্বশেষ হালনাগাদ বৈঠকে তুলে ধরা হয়। বৈঠকে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের আগে সেখানকার নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার দাবি বাংলাদেশের কাছে তুলে ধরা হয়। জবাবে বাংলাদেশ জানায়, মিয়ানমার একটি সার্বভৌম দেশ। তারা কাকে কীভাবে নাগরিকত্ব দেবে সেই দিকনির্দেশনা বাংলাদেশ দিতে পারে না। এ দায়িত্ব ইউএনএইচসিআর তথা জাতিসংঘের পালন করা উচিত।

ঢাকার পক্ষ থেকে বলা হয়, মিয়ানমারে ইউএনএইচসিআরসহ জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার কার্যালয় রয়েছে। ফলে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে যে নাগরিকত্ব বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তা জাতিসংঘকেই সমাধান করতে হবে। এ সময় জোহানেস ভ্যান ডের ক্লাউ জানান, রাখাইনে ইউএনএইচসিআরকে কাজ করতে দেয়া হয় না। তারা যাতে কাজ করতে পারে, সে বিষয়ে মিয়ানমারকে অনুরোধ করতে ঢাকাকে অনুরোধ জানান তিনি। তবে ইউএনএইসিআরের সেই অনুরোধও নাকচ করে দিয়েছে ঢাকা।

বৈঠকে বলা হয়, ঢাকার মূল লক্ষ্য- স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, সম্মানের সঙ্গে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার প্রত্যাবাসন চুক্তি অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন হচ্ছে কি না সে বিষয়টি নিশ্চিত করা। পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে জাতিসংঘকে এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে শুরু থেকেই রাখা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় যদি কোনো সমস্যা থাকে তা হলে তারা সেটি তুলে ধরতে পারে।

সূত্র জানায়, চীনের মধ্যস্থতায় আসছে বর্ষা মৌসুমের আগেই রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। এরই অংশ হিসেবে সম্প্রতি রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশ সরকারের ২৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রাখাইনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এসেছেন। রাখাইন থেকে ফিরে রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, সেখানে প্রত্যাবাসনের জন্য সহায়ক পরিবেশ দেখছেন না তারা। তবে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আশাবাদী।

বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রায় ৯ লাখ ৫৪ হাজার ৭০৭ জন রোহিঙ্গা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরের কাছে নিবন্ধিত। এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার পূর্ণাঙ্গ তথ্য মিয়ানমারকে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে মাত্র ৭-৮ শতাংশ, প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গার তথ্য যাচাই–বাছাই করেছে দেশটি। এই ৭০ হাজারের মধ্যে ৫২ শতাংশ রোহিঙ্গার বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে নেপিডো। বাকিদের কারও তথ্য তারা পায়নি। এ ছাড়া আরও কিছু রোহিঙ্গাকে জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করেছে মিয়ানমার।

পাঠকের মতামত

ন্যূনতম খাদ্য গ্রহণে খরচ করতে হচ্ছে দারিদ্র্যসীমার ব্যয়ের চেয়ে প্রায় ৭০% বেশি

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে সুস্থভাবে জীবনধারণের জন্য প্রতিদিন যে পরিমাণ খাদ্যশক্তি (২ হাজার ১০০ ...

রোহিঙ্গাদের আত্তীকরণের পক্ষে নয় বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র সচিব

রোহিঙ্গাদের আত্তীকরণ বাংলাদেশের জন্য বিবেচনাযোগ্য বিকল্প নয় বলে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) ঢাকা প্রধান ল্যান্স ...